আগামীকাল ৩০ সেপ্টেম্বর রবিবার খুলনা মারকাযে আলেমদের সমন্বয়ে তাবলিগ জামাতের বিশেষ ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এতে খুলনা জেলার সকল হালকার দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীগণ, ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং আলেমসহ মাদরাসার ছাত্ররা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
ওয়াজাহাতি জোড়ে দিকনির্দেশনা-মূলক বয়ান পেশ করবেন বাংলাদেশ দাওয়াতে তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা রবিউল ইসলাম এবং মাওলানা আব্দুল বার।
কাকরাইলের মুরব্বিগণ ছাড়াও খুলনার নেতৃস্থানীয় উলামায়ে কেরাম বয়ান পেশ করবেন।
খুলনার উলামায়ে কেরাম ওয়াজাহাতী জোড়ের বিষয়ে কাকরাইলের নির্দেশনার কথা নিয়মিত মাশওয়ারায় উথাপন করলে সর্বসম্মতিক্রমে মারকাযেই ওয়াজাহাতি জোড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে মাওলানা সাদপন্থীদের প্রভাবধীন খুলনার মারকাযের এ পক্ষ সর্বসম্মতভাবে রবিবারের জোড়েই আগেই শুক্রবার আরেকটি জোড় করে, যা রবিবারের জোড়ের প্রতি এক ধরনের উপেক্ষা বলেই বিজ্ঞ মহল মনে করছেন।
তাবলিগ জামাতের চলমান সঙ্কটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কাছে প্রকৃত বিষয় ও ওলামায়ে কেরামের অবস্থান তুলে ধরতে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে বিশেষ এ ওয়াজাহাতি জোড়।
গত ২৮ জুলাই ঢাকার মুহাম্মদপুরে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে প্রথম এ জোড় অনুষ্ঠিত হয়। পর্যায় ক্রমে সারাদেশেই এ জোড় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অনুষ্ঠিত জোড়ে ৬ টি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. জমহুর উলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন, তিনটি মৌলিক কারণে- (ক) কোরআন ও হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, (খ) তাবলিগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলিগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয়প্রতিপন্ন করা।
(গ) পূর্ববর্তী তিন হজরতজি (হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ, ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।
২. মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ী নেযামকে উপক্ষো করে নিজেই নিজেকে আমীর দাবি করেছেন; যা শরিয়ত বিরোধী। তাই তার কোনরূপ সিদ্ধান্ত-ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত করা যাবে না।
৩. দারুল উলুম দেওবন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতাদর্শ থেকে সরে গিয়ে নতুন কোনা ফেরকা গঠনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কোনা জামাত বা ব্যক্তিকে নেযামুদ্দিনে পাঠানাে বা যাওয়া মুনাসিব হবে না।
অনুরূপভাবে নেযামুদ্দিন থেকে আগত কোনো জামাতকে বাংলাদেশের কোনো জেলায়/থানায় ইউনিয়নে কাজ করার সুযাগ দেওয়া যাবে না।
৪. হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ. ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ এর বাতানা পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ সারা দুনিয়াতে সমাদৃত ও গৃহীত হয়েছে।
তাই বাংলাদেশের তাবলিগের কাজ পূর্ববর্তী এই তিন হজরতের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। নতুন কোনো পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কাকরাইল, টঙ্গী ময়দান এবং জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে।
৫. কাকরাইল মসজিদের যে সমস্ত শুরা সদস্য আমরণ মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবের ভ্রান্ত আকিদা অনুসরণের হলফনামা করেছেন যা শরিয়ত পরিপন্থি- তারা শুরার সদস্য থাকার যােগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন।
অতএব, তাদেরকে তাবলিগের কাজে শুরা ও ফায়সাল না রাখার আহ্বান জানানা যাচ্ছে ।
৬. ২০১৮-এ টঙ্গী ইজতেমায় সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে আগামী ২০১৯-এর টঙ্গী ইজতেমার জন্য নির্ধারিত তারিখ- প্রথম পর্ব ১৮, ১৯, ২০ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫, ২৬, ২৭ জানুয়ারি এর সাথে আজকের মজমা ঐকমত্য পোষণ করছে।